মুল্যহীন সামাজিকতার অমূল্য কদর

Bridal

জানি তেতো লাগবে। জন্মের প্রথম প্রহর হতে মৃত্যুপর অবধি যেটির বিস্তৃতি। যে অপয়া আনুষ্ঠানিকতা আষ্টেপৃষ্ঠে আমাদের সমস্তে জড়িয়ে আছে। সেটির সমালোচনা ভালো লাগবার নয়। তবে সমালোচনা নয়। আলোচনাই মুখ্য এখানে। সমাজ নয়। সমাজকে ঘিরে যে সামাজিকতা। সেই সামাজিকতার চিত্তের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরাই প্রধান উদ্দেশ্য। মানুষে মানুষে যে প্রাকৃতিক বন্ধন। একে অপরের প্রতি অনুভূত যে টান। একজনের জন্য অন্যের যে মর্ম উপলব্ধি। তাদের মধ্যকার যে ক্রিয়া-উপক্রিয়া। সেই পদ্যের সম্মিলিত সঙ্গীতই তৈরি করে সমাজ নামক অপ্রাকৃতিক এক সঙ্ঘ। শুধু মানুষই নয়। সমস্ত প্রাণীই একদিন জড়িয়ে পড়ে সেই আদিম ঘূর্ণনে। এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল। মানুষের সমস্ত কর্ম-উপকর্মগুলো চলছিলও বেশ।

বাহ্যিক ও আরোপিত জ্ঞ্যানই হয়ে উঠলো বুমেরাং। সমাজকে আরো বেশি সুন্দর করার জন্য যে সংযোগ ও প্রতি-সংযোগ ঘটানো হল। সামাজিকতা নামেই যার পরিচয়। সমাজ, মানুষ বা বৃহৎ প্রাণী সমাজ ছাপিয়ে সেগূলোই হয়ে উঠলো অতিউত্তম পূজার্য্য বিষয়। ব্যক্তি হতে পরিবার, সমাজ। সব জায়গায় সেগুলোর সগর্ভ বিচরণ। আমার কি খাওয়া উচিৎ? কি করা উচিৎ? আমার কোন রঙ পছন্দ করা উচিৎ? কোথায় ঘুমানো উচিৎ? আমার কি পরা উচিৎ? পরিধেয় কাপড়ের মাপ  কি হবে? শুধু তাই নয়। এই নোংরা অবাঞ্চিতের প্রবেশ নিজ ঘর অবধি। আমি কাকে নিয়ে ঘুমবো। তার গায়ের রঙ কি হবে? তার আকার কেমন হবে? সেটিও নির্ধারণ করা শুরু করলো এই সামাজিকতা। ঘৃণার পরিবর্তে আমরা সানন্দে সেটিকে গ্রহিলাম। বাজনা বাজিয়ে বরণ করলাম।  শুধু তাই নয় ধর্ম নামক অন্য এক অতি আদিখ্যেতা ‘এমনেই নাচুনে বুড়ি, তার সাথে ঢোলে বাড়ি’ দিতে শুরু করলো। ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিল আমাদের সমস্ত। পবিত্র সমাজের রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দিয়েছিল কুসংস্কারের নীল বিষ।

এক সময় অতিপ্রাকৃত যৌবনের বার্তাও আমাদের কাছে হয়ে উঠলো ভয়ের কারণ। তাই এখানে সন্তান জন্মাতে লাগে আদিখ্যেতা। নিজ সন্তানকে আপন করতে লাগে আদিখ্যেতা। জ্ঞ্যান অর্জনে লাগে আদিখ্যেতা। এমনকি ভালোবাসতে লাগে আদিখ্যেতা। জীবন সঙ্গীকে আপন করে পেতে দেখাতে হয় আদিখ্যেতা। সামান্য একটা মেটালিক পদার্থ প্রদান করে। আর এই সমাজিকতায় দু-চারটা লাইন পড়লেই একজনকে সারাজীবনের জন্য পাওয়া যায়! এখানে মানুসিক রসায়ন এক ভীতির বিষয়। অথচ বোকার মত তাদের মাঝে বাকি জীবনের প্রশান্তি পত্যাশা করা হয়। আমাদের সমস্ত শুভ কাজেই জুড়ে দিল সংস্কারের সামাজিকতা। আর দুঃখে একলা চলার বাণী। পকেটে টাকা আছে, হাতে হাতিয়ার— তুমি সুশীল। তোমার গায়ের রঙ সুন্দর, তোমার শরীরে আকর্ষণ আছে— তোমার কদর অনেক অনেক বেশি। তুমি ভালো চাকর, মাস শেষে তোমার হাত ভর্তি টাকা— তুমি ভালো পাত্র। তোমার  ভেতরে কি ছাইপাঁশ পুরে রেখেছো। কতটা নোংরা তোমার ভেতর। কতটা হিংস্রতা তোমার মনের মধ্যে খেলা করে। তাতে কোন ভ্রক্ষেপ নেই মোটেও। বাহ্যিকতাই তোমার শতদল সৌন্দর্য।

যখনই সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, হানাহানি হয়েছে। তৈরি হয়েছে আইন, আদালত। কিন্তু দেখার চেষ্টা করেনি তার ভেতরের যন্ত্রনা। শুধরানোর চেষ্টা হয়নি তার মননকে। আজ সমাজের সর্বত্র হানাহানি, ঘৃণা, অহংকার ও ক্রোধের বিচরণ। প্রতিক্রিয়ায় চলছে সেই মধ্যযুগীয় প্রক্রিয়া। একটা নিষ্ঠুরতা ঘটলে তাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা সাথে তুলনা করা হয়। অপরাধ মধ্যযুগীয় নয় বরং প্রক্রিয়াটি মধ্যযুগীয়। অপরাধ, নিষ্ঠুরতার শ্রেণীবিভাগ হয় না। আর সেটা করার চেষ্টা মূর্খতা মাত্র। মৃত্যু মানেই মৃত্যু। কষ্ট মানেই কষ্ট। সেটা যেভাবেই হোক। এর ধরণ ভেদ হয়না। তবে জীবনের প্রকার আছে। জীবন থেকে জীবনের ভেদ আছে। সেই ভেদ বুঝেই গড়া উচিৎ ছিল আমাদের সামাজিকতার। অথচ সেটা আমরা পারিনি। একটা শিশুকে দেতে পারিনি তার সঠিক বাসস্থান ও সুস্থ পরিবেশ। দিতে পারিনি তরুণকে তার ঠিক-ঠাক  কদর। যুবককে তার বিচরণ ক্ষেত্র। এমনকি কোন পৌঢ়কে সুপরিবেশ। অথচ শুধু মানুষকে মানুষ হিসেবে, ভালোবাসাকে ভালোবাসা আর যত সত্য সবগুলোকে সত্য ভাবলেই সমাধান হয়ে যেত।

শব্দলেখকঃ  তরিকুল ইসলাম

৩১১০৪৪০০০ সেকেন্ডের গল্প

 

 

সূর্যাস্ত কখন হয়েছে ঘড়িটা দেখা হয়নি

তবে, এমনি এক সূর্যাস্তের পর

আমার ফেইসবুক নামক অতীবজাগতিক একটি যান্ত্রিক মাধ্যমে যে সংকেত পেয়েছিলাম তার অনুরণন গড়াল বছরে

এটা ৩১১০৪৪০০০ সেকেন্ড, ৫১৮৪০০ মিনিট, ৩৬৫ দিন ও ১২ মাসের গল্প

এরই মাঝে প্রায় তিনশত পঁয়ষট্টি বার নতুন সূর্যের আগমন হয়ে গেল

সে তিনশত পঁয়ষট্টি বার আলোকিত করলো পৃথিবী

একই সংখ্যক রাত আঁধার নামলো; সবাই চলে গেছে।

রেখে গেছে হাজার ক্রোশ স্মৃতি আর এই একজন মানুষ।

সঙ্গে সুন্দর মন, একটি সুন্দর বিবেক

যে কখনও আশা, কখন সুখ এবং কখনোবা প্রাশান্তি নিয়ে এসেছে আমার জীবনে; আর আমি বয়ে চলেছি তার সমস্থভার, প্রত্যাশার দুরন্ত পারদ এবং আর একহালি স্বপ্ন।

জন্ম, সুখ, প্রেম-ভালোবাসা ও মৃত্যু। আমি জানি পৃথিবী সুন্দর। আর এই সুন্দর পৃথিবীর সৌন্দর্য মানুষ

মানুষের জন্ম সুন্দর, বেড়ে ওঠা সুন্দর আর সুন্দর সংসর্গ।

ভোরের আলো ভালো লাগে

ভালো লাগে শীতের মিষ্টি রোদ

বিনীত চেয়ে থাকায়ও সুখ আছে।

সুখ আছে বৃত্তে, কোন সম্পর্কের বৃত্তে, কোন প্রাপ্তির বৃত্তে অথবা সুন্দরের বৃত্তে।

আমি আজ এমনি কোন এক বৃত্তে ভাসিয়ে দিয়েছি স্বপ্নের পালক ও প্রত্যাশার বালুকণা।

একটা মাত্র কোন ঘূর্ণির অপেক্ষায়; চলছে আরো চলার প্রত্যয়ে।।

ঘৃণা হয়

ঘৃণা হয়

Hate

আমারো আজ ঘৃণা হয়

প্রচণ্ড ঘৃণা

প্রচন্ড ক্রোধ জমে বুকের মাঝে

ঘৃণায়, অবজ্ঞায় ভরে উঠে মন

নিজেকে মানুষ বলতে আজ আমার ঘৃণা হয়

আজ প্রবল কান্না ভেঙ্গে আসে বুক-চোখ দিয়ে

প্রবল কষ্ট আঘাতে আমার অন্তর

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল শকুনের ধারারো নখে রক্তাক্ত

তরল রঞ্জন পদার্থে নেকড়েরা আজ নেশাগ্রস্থ

রক্তের গুমোট হাওয়া আমার নাসায়ন্দ্র আর নিতে পারছেনা

আর কত?

আর কত হিংস্রতায় ঘুম ভাঙ্গবে আমাদের?

আজ কত বীভৎসতায় তুমি জাগবে জনতা?

আর কত?

আজ ওরা, কাল আমি, পরশু তুমি বা অন্যকেউ

এভাবে আর কত?

এভাবে আর কত উগ্রতা মঞ্চস্থ হলে তোমার মৃত আত্মা জাগবে বাঙ্গালী?

আর কত বন্যতা পোষণ করলে মানুষ পরিচয়ে তোমার লজ্জা হয়?

আর কত পশুত্ব চর্চা হলে তোমার ঘৃণা হবে এই চার হাত-পা ওয়ালা প্রাণীর খোলস লাগাতে?

আর কত?

আরো পড়ুনঃ